পোস্টগুলি

নকুল রায়, দায়বদ্ধতা থেকে যিনি কখনোই মুক্তি চাননি

  শুরুতেই বলে রাখি কবি নকুল রায়ের সামগ্রিক কবিতাচর্চা নিয়ে কথা বলবার জন্য এই লেখা নয়। ক্ষুদ্র পরিসরে তার দীঘল কাব্যভুবনের দিকে ফিরে তাকানো সম্ভবও নয়। সম্পাদক মহাশয় অবশ্য এক্ষেত্রে সীমা বেঁধে দিয়েছেন। তিনি চেয়েছেন কবি নকুল রায়ের যেকোন পাঁচটি কবিতা নিয়ে আলাপচারিতা। সুতরাং যাবতীয় কথা পাঁচটি কবিতাকে ঘিরেই থাকা উচিত। তবে বেসুরো গায়কের গলায় যেমন সূত্রের চেয়ে ভাষ্যের দিকে, গানের চেয়ে কানে হাত চাপা দিয়ে বিপুল অঙ্গভঙ্গির দিকে ঝোঁক লক্ষ করা যায়, আশঙ্কা, আমার আলোচনাও সেই পথেই যেতে পারে। কবিতার আলোচনায় অন্ধের হস্তিদর্শন ছাড়া গতি কী! কোনো মহৎ কবিতাই তার প্রতি স্তরে, পাঠক এমনকি লেখককেও অবাধ প্রবেশের অনুমতি দেয় না। আবার যেখানে ইশারা ও ইঙ্গিতই মূল ভাষা, সেখানে প্রতিটি কথা, মত বিরুদ্ধ মত, সবই সম্ভাবনাময়। এটাই ভরসা।         এছাড়া কবিতার নির্বাচন একটা সমস্যা। কোন পাঁচটি কবিতা! কবি নকুল রায় সারাজীবনই লিখেছেন। ‘নীহারিকা’ থেকে ২০২০ সালে তার ‘কবিতা সমগ্র’ বেরিয়েছে, যাতে তার কুড়িটি কাব্যগ্রন্থ ও অনেকগুলো অগ্রন্থিত কবিতা স্থান পেয়েছে। তার প্র...

কবি জাফর সাদেক, যার কোনো উত্তরসূরী নেই, অভিজিৎ চক্রবর্তী

  ক বি জাফর সাদেককে নিয়ে যখনই ভেবেছি, সকল থিওরি অর্থহীন মনে হয়েছে। কবি কি জন্মান, না হয়ে ওঠেন! এই আপাত অর্থহীন বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে যায় সহসা। অনুশীলনই তো একজন কবিকে সিদ্ধির কাছে নিয়ে যায়। এই অনুশীলন কখন শুরু হয়? ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই! হয়তো তা-ই। হয়তো নয়। এই সকল প্রশ্ন বারবার একটি অসমাধানযোগ্য অবস্থানে নিয়ে যায় ।  অনুশীলন কি সময়সাপেক্ষ বিষয়? এই অভিজ্ঞতাটি কেমন? যদি ভাবি কবি হয়ে ওঠেন, তবে ঈশ্বর বা দেবতার আসনে কবিকে বসাতে হয়। কিন্তু সেই রূপকল্প থেকে আমরা অনেকদূর সরে এসেছি ।  আমাদের মনোজগত আর এই বক্তব্যে সায় দেয় না।  যদি ভাবি অনুশীলনের কথা, তবে চমকিত হতে হয় জাফরের সুতীব্র দ্রুত অশ্বখূরের ধ্বনি শুনে। ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছে আমাদের স্বপ্নের ঘেরাটোপ।             কবি জাফরের কবিতা পাঠও সেই রকম একটি অস্থিরতার জগত সৃষ্টি করে ফেলে আমাদের মনে। একটা অনিশ্চয়তা। যদি ভাবি এই অস্থিরতা অনিবার্য ছিল, তবে আমাদের সাজানো সংসার, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র প্রক্রিয়াটি প্রশ্ন-কণ্টকিত হয়ে ওঠে ।  বি শ্বাসের পাকাপোক্ত ভিতটি টলে যয় ।  এই মিথ্যাচার ও কূহকময় ধূর্ত সমাজ ...
   অভিজিৎ চক্রবর্তী তমসা সিরিজ এক একা নিরক্ষরা রাত। ওড়ে বাঘছাল।  মা মা বলে ডাকে মনোহর। ভয় পেয়ে ডাকে।  বিষাদ। পংক্তির কাটা মাঠ। ফাঁকে ফাঁকে  সরোবর। তোর লীলা অবাধ। অক্ষর-শিস নাভি থেকে ওঠে  ধ্বনি তো প্রহরের প্রমাদ। লুঠ হবে গ্রহ-তারা পরমায়ু, যতি। কারক ও ক্রিয়াপদ। দুই কপালে আলোর ছিঁটে লাগে। দূর গোধূলি-মায়ার। যাও ছুটে যাও।  ছবি। স্মৃতি। দেহ ভেসে যায় কোলাহলে।  একা জলযান আসে– গোপন। লোকালয়ের। লাল নীল আলো চোখে মুখে। মাঠেই দাঁড়ালো। তমসা। নিকষ কালো– কালো তো মা-ই আমার। কান্না শুকিয়ে পাথর। পাথর তো মা-ই। পাথরের স্তন। চুষতে চুষতে স্ফূরণ তিন জলের ভিতর আর বাইর। রাস্তায়  পানের দোকানে– সব কথা জমে ক্ষীর।  নিরক্ষর চাঁদ। উদার জোছনা।  জোছনা না কাচ। পায়ে বিঁধে যায় অনুগত দিন।  দিনের ভেতর না বাহির। পাত  এই সংশয়ে বাজে বীণ                        বাড়ে ঋণ  চার রাত-সরোবর। চাঁদ নেই। তাই অন্ধ। দেখে না। কবি দেখে। কবিরা নিশাচর। নে...